কিস্তি না দেয়ায় এনজিও কর্মীর অসভ্যতা, আ’ত্মহ’ত্যা করলেন গৃহবধূ
বাংলাদেশ

দুই মেয়ের ভরণ পোষণ ও সংসার চালাতে প্রায় সময়ই বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিতে হত গৃহবধূ নাজমা আক্তারকে (৪০)। সেসব শোধও করে দিতেন। কিন্তু সম্প্রতি অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না যাওয়ায় সব শেষ কিস্তির টাকা দিতে পারছিলেন না।
আর এনজিও কর্মীরা কিস্তি তুলতে এসে টাকা না পেয়ে নাজমা ও তার মেয়েদের নিয়ে ‘অ’সভ্য’ কথা বলেন বলে অভিযোগ। এতে প্রচণ্ড অপমানবোধে আ’ত্মা’হুতি দেন গৃহবধূ নাজমা। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর গ্রামের। নিহত নাজমা ওই গ্রামের পূর্ব পাড়া মোল্লা বাড়ির মাছ বিক্রেতা সফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, সফিকুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেন। তার মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক, আশা ব্যাংক, দিশা ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক অন্যতম। নাজমা বেগমের চার মেয়ের মধ্যে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, দুই মেয়ে বর্তমানে স্কুলে লেখাপড়া করছে। সম্প্রতি নাজমা আক্তার এনজিওর ঋণ সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে পারছিলেন না।
শুক্রবার আশা ব্যাংক ও গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তির তারিখ ছিলো। নাজমা বেগম কিস্তির টাকা দিতে না পারায় আশা ব্যাংক ও গ্রামীণ ব্যাংকের লোকজন তার বাড়িতে এসে গালমন্দ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার মেয়েদের সম্পর্কে খা’রাপ মন্তব্য করেন।
নাজমা আক্তারের পাশের ঘরে বসবাসকারী রানু বেগম জানান, শুক্রবার কিস্তির টাকার জন্য দুজন লোক আসে। নাজমা বেগম টাকা দিতে না পারায় গালম’ন্দ করে তারা। এক পর্যায়ে তারা বলেন- টাকা না দিতে পারলে ম’রে যান, ম’রে গেলে টাকা মাফ হয়ে যাবে।
এনজিও কর্মীরা চলে যাওয়ার পর নাজমা আক্তার ঘরের দরজা বন্ধ করে কা’ন্না-কাটি করতে থাকেন। শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় নাজমা আক্তার ঘরের মধ্যে থাকা ছারপোকা মা’রার ট্যাবলেট খেয়ে ফে’লেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি বুঝতে পেরে তাঁকে গৌরিপুর মুক্তি মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃ’ত ঘোষণা করেন।
পরে লা’শ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে দাউদকান্দি থানা পুলিশ বিকালে নাজমা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। দাউদকান্দি থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, অপমৃ’ত্যুর খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লা’শ ময়’নাতদন্তের জন্য ম’র্গে পাঠানো হয়েছে।