সেই চা বিক্রেতার বিদ্যালয় হলো এমপিওভুক্ত
বাংলাদেশ

সূত্রে জানা গেছে, খালেদের দেয়া জমিতে ১৯৯৭ সালে ১ জানুয়ারি নলুয়া চাঁদপুর উচ্চবিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৪৩৭ জন শিক্ষার্থীকে পাঠ দানের জন্য ছয়জন শিক্ষকের পাশাপাশি রয়েছে চারজন খণ্ডকালীন শিক্ষক। স্কুলটি জরাজীর্ণ টিনশেডের ঘরের তৈরি। তবে নতুন করে একটি চারতলা ও একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হবে বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়ে খালেদ বলেন, ‘আমার দান করা জমিতে নির্মিত বিদ্যালয় এমপিভুক্ত হওয়াতে আমি খুব খুশি। আমি এই এলাকার ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌঁছাতে পেরেছি। এটাই আমার সার্থকতা।’
বিদ্যালয় নির্মাণের চিন্তা কিভাবে আসলো এই প্রসঙ্গে খালেদ বলেন, ‘গ্রামের অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত হওয়ায় তাদের মধ্যে কিছুটা কুসংস্কার ছিলো। তার মধ্যে হাতে গোনা যে কয়েকজন শিক্ষিত বিএ পাস ছিলো তাদের নিয়ে কেউ কেউ রসিকতা করত। চা বানাতে গিয়ে একদিন প্রতিজ্ঞা করলাম, গ্রামের মানুষদের শিক্ষিত করে তুলতে হবে। তাদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে হবে। এই ভাবনা থেকেই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিই।’
‘তাই তো, নিজের কেনা ৫২ শতক জমি বিলিয়ে দিই প্রতিষ্ঠানের জন্য। এখন আমার ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শত শত শিক্ষার্থী। প্রতিদিন বিদ্যালয়ের সামনে বসে চা বানাই, আর শিক্ষার্থীদের হই–হুল্লোড় দেখি। এসব দেখে পরান জুড়িয়ে যায়। মনে শান্তি পাই। মাঝে মধ্যে শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে দুষ্টুমি করে। আমার স্ত্রী, সন্তান না থাকায় ওদেরই আমার সন্তান এবং নাতি-নাতনির মতো মনে হয়।’
খালেদের স্বপ্ন ছিল বিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফল দেখা। সেটি সফল হওয়ার ৯১ বছর বয়সী খালেদ চান বিদ্যালয়টি যেন একদিন কলেজ পর্যন্ত এর কার্যক্রম সম্পসারণ করা হয়।