গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা জনপ্রিয় গীতিকার মেহবুবুল হাসান রাসেল ও’নীল এর মরদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইডাল নোট পেয়েছে পুলিশ। নিজের স্বাক্ষর করা ওই নোটে তিনি তার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। এমনকি নোটে তার মরদেহ কোনো পোস্টমর্টেম (ময়না তদন্ত) না করতে লিখে গেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর নাখালপাড়ার নিজ বাসা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যাওয়ায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, তিনি স্বেচ্ছায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুক ঢাকা টাইমসকে বলেন, তেজগাঁও লিচু বাগান এলাকায় নিজের রুম থেকে রাসেলের ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় তার রুম থেকে একটি সুইসাইডাল নোট পাওয়া যায়। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত চলছে।
নোটে যা লেখা আছে:
পুরো লাল কালিতে লেখা উদ্ধার করা নোটে এই গীতিকার লিখেছেন-
জরুরি, আমার মৃত্যুর জন্য কেহ দায়ী নয়। আমি স্বেচ্ছায় আত্মহনন করলাম। এর সঙ্গে কাওকেই জড়িত করা যাবে না। এবং আমার মরদেহের কোনো পোস্টমটেম (ময়না তদন্ত) হবে না। রাসেল ওনিল।
চিরকুটের নিচে একটি স্বাক্ষরও রয়েছে।
নিহতের পরিবারের বরাতে জানা গেছে, করোনার সময়ে দীর্ঘদিন বেকার ছিলেন এই গীতিকার। তখন থেকেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। রাসেল পরশুদিন বাসায় প্রবেশ করে। এরপর থেকে তিনি আর রুম থেকে বের হননি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) তাকে পরিবারের সদস্যরা ডাক দিলেও গেট খোলেন নি। তিনি মাঝে মাঝে এভাবে রুম বন্ধ করে থাকতেন। পরে রুমে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরিবারের বরাতে পুলিশ জানেছে, করোনার পর থেকে রাসেল বিষন্ন ছিল। অনেক দিন তিনি কাজের বাহিরে ছিলেন। এর আগে এক মাস রিহ্যাবে (মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে) ছিলেন রাসেল।
‘দিন বাড়ি যায়/চড়ে পাখির ডানায়’— এর মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গানের রচয়িতা রাসেল একসময় সাংবাদিকতায়ও যুক্ত ছিলেন। পরে সাংবাদিকতা ছেড়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থায় যুক্ত হন। গানের পাশাপাশি অসংখ্য বিজ্ঞাপনের জিংগেলও লিখেছেন তিনি। তার লেখা অধিকাংশ গানই দলছুট এবং বাপ্পা মজুমদারের গাওয়া।
গায়ক ও সংগীত পরিচালক বাপ্পা মজুমদার তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ফের দেখা হবে বদ …!! এইটা কি করলি তুই!!’