জন্মগতভাবেই কারও কারও ত্বক হয় তৈলাক্ত। এ ত্বকের জন্য বিভিন্ন সমস্যা ভোগ করতে হয়। তৈলাক্ত ত্বকের রোমকূপ সহজেই বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্রণ তৈরি করে।তৈলাক্ত ত্বক প্রতিদিনই নিয়ম করে পরিষ্কার করতে হয়, নয়তো খুব দ্রুত ত্বক ময়লা হয়ে ব্রণে ভরে যায়।
ত্বকের এই তৈলাক্ত ভাব দূর করতে অনেকেই রাসায়নিক ফেসওয়াশ ব্যবহার করেন। এগুলো সহজেই ত্বক থেকে তেল দূর করে সত্যি, কিন্তু এতে আমাদের ত্বক আরও বেশি করে তেল উৎপাদন করে। রাসায়নিক ফেসওয়াশের বদলে বরং ব্যবহার করুন ঘরোয়া কিছু ফেসপ্যাক। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর হয় এবং রোমকূপ থেকে তেল নিঃসরণের মাত্রাও কমে। এসব ফেসপ্যাক সপ্তাহে মাত্র একদিন ব্যবহার করাই যথেষ্ট।
১) লেবু এবং দই: লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড, যা ত্বকের তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে দইতে আছে ল্যাক্টিক এসিড, যা ত্বক পরিষ্কার করে। এই দুই উপাদান মিলে ত্বক থেকে তেল এবং মৃত কোষ দূর করে। ফলে ব্রণের উপদ্রব কমানো যায়।
এই মাস্ক তৈরির জন্য ২ টেবিল চামচ দই এবং ২ টেবিল চামচ লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে বা ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এই মিশ্রণ একটি ব্রাশের সাহায্যে মুখের ত্বকে প্রয়োগ করুন। ৫-১০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এরপর অয়েল-ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
২) মুলতানি মাটি এবং শসা: ত্বক থেকে অতিরিক্ত ময়লা এবং তেল দূর করতে কাজ করে মুলতানি মাটি। তা ব্রণ দূর করতেও কার্যকরী। অন্যদিকে শসা ত্বকের রোমকূপ ছোট করে এবং তেল-ময়লা দূর করে।
এই ফেসপ্যাক তৈরির জন্য ২ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে যোগ করুন ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং ২ টেবিল চামচ শসার রস। এই মিশ্রণ ত্বকে মাখিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট। এরপর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন এই ফেসপ্যাক।
৩) কমলার খোসা: ত্বকের তেল-চকচকে ভাবটা দূর করতে এই উপাদান খুবই কার্যকরী। কমলার খোসা ছায়ায় রেখে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর গুঁড়ো করে নিতে হবে। এই গুঁড়োর সাথে পানি, দুধ বা দই মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। এরপর এই প্যাক মুখে ব্যবহার করতে পারেন। তেল ও ময়লা আটকে থাকা রোমকূপ পরিষ্কার করে এই প্যাক। এতে আপনার ত্বকে উজ্জ্বলতা ঠিকই থাকবে, কিন্তু তেলতেলে ভাবটা চলে যাবে।
৪) ডিমের সাদা অংশ: ডিমের সাদা অংশটি রোমকূপ পরিষ্কার করতে দারুণ কার্যকরী। এছাড়া এতে রোমকূপ ছোটও হয় সহজে। দইয়ের সাথে মিশিয়ে সহজেই ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। একটি ডিমের সাদা অংশ এবং এক টেবিল চামচ দই মিশিয়ে নিন। বিটার ব্যবহার করুন, যাতে কোনো দলা না থাকে। এরপর এই মিশ্রণ মুখে দিয়ে রাখুন। শক্ত হয়ে এলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৫) ওটস এবং অ্যাভোকাডো: অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য বা সুস্থতার জন্য ওটস খান সকালের নাশতায়। ওটস ত্বক থেকে তেল শুষে নিতে দারুণ কার্যকরী। অন্যদিকে অ্যাভোকাডোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। এই দুইয়ের মিশ্রণ ত্বক থেকে তেল দূর করে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে।
এই মাস্ক তৈরির জন্য প্রয়োজন আধা কাপ ওটস এবং অর্ধেকটা পাকা অ্যাভোকাডো। ওটস ৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর অ্যাভোকাডো চটকে এর সাথে যোগ করুন। এই মিশ্রণ ত্বকে মেখে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সূত্র: এনডিটিভি